স্টাফ রিপোর্টারঃ রংপুরে মা ও ছেলের বন্দি জীবন কাটছে ৮ বছর ধরে। ৩০ বছর বয়সী ছেলেকে প্রায় আট বছর ধরে আর ৫৫ বছর বয়সী স্ত্রীকে প্রায় সাত বছর ধরে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে জানান শহরের বধুকমলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন তার ছেলে। পরে অসুস্থ হয়ে বাড়ি চলে আসেন। “এরপর তার মানসিক রোগ দেখা দেয়। কাপড় পরে না। সব সময় উলঙ্গ থাকে। লোকজনের ওপর চড়াও হয়। যাকে সামনে পায় তাকেই মারধর করত। ফলে পরিবারের লোকজন প্রায় আট বছর ধরে তাকে একটি ঘরে শেকলে বেঁধে রেখেছে। কেউ তার কাছে যেতে পারে না। দূর থেকে খাবার দেওয়া হয়। পায়খানা থেকে শুরু করে সবই করে ঘরে। সব সময় সারা শরীরে কাদামাটি মেখে রাখে।” রশীদ বলেন, “ছেলের এই সমস্যার কিছুদিন পর স্ত্রীও মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। প্রায় সাত বছর ধরে তাকে আলাদা ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছি। তবু তারা সুস্থ হয়ে হয়নি। স্ত্রীও সবকিছু ওই ঘরেই করে।” তাদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমিজমা সব বিক্রি করেছেন জানিয়ে রশিদ বলেন, “অনেক চিকিৎসকের কাছে গিয়েছি। তারা সুস্থ হয়নি। বাড়ির জমিটুকু ছাড়া এখন আর আমার কিছু নাই। অটোরিকশা চালিয়ে কোনো রকমে পেট চালাচ্ছি। স্ত্রী-সন্তানের চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই।”
রশিদের তিন ছেলে। ছোট ছেলে রশিদের সঙ্গে থেকে মা-ভাইকে দেখাশোনা করেন। রশিদের অন্য ছেলে বিয়ে করে অন্যত্র বাস করেন বলে জানান রশিদ।
তিনি স্ত্রী-সন্তানের চিকিৎসায় সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন। ওই এলাকার শাহিনুর ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, একসময় পরিবারটি সুখের ছিল। দুইজন অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসা করাতে করাতে রশিদ মিয়া নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তার আর কিছুই নেই। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুনার রশিদ মানিক মিয়া বলেন, পরিবারটিকে সহায়তা দেওয়ার জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে। আবেদন করলে মেয়রের মাধ্যমে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় চেষ্টা করা হবে।
তথ্যও সংবাদঃ রংপুর প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম